পাঠ্যবই এবং পাঠ্যবইয়ের বাইরে আমরা অনেক রকম ছবি দেখতে পাই। যাঁরা ছবি আঁকেন তাঁদের বলা হয় চিত্রশিল্পী, আর যাঁরা ছবি তোলেন তাঁদের বলা হয় চিত্রগ্রাহক। সাধারণভাবে মানুষের প্রতিকৃতি, জনজীবন, প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান ছবির বিষয় হিসেবে দেখতে পাওয়া যায়। ছবির মধ্য দিয়ে চিত্রশিল্পী ও চিত্রগ্রাহকের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটে। সেই ছবি দেখে দর্শকের মনেও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। চিত্রশিল্পী ও চিত্রগ্রাহকের এই দৃষ্টিভঙ্গি এবং দর্শকের প্রতিক্রিয়া বিবরণমূলক ভাষায় উপস্থাপন করা যায়।
নিচে কয়েকটি ছবি দেওয়া হলো। ছবিগুলো ভালোভাবে দেখো। এরপর 'আমার বাংলা খাতা'য় ছবির বিষয়, চিত্রশিল্পী-চিত্রগ্রাহকের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দর্শক হিসেবে তোমার প্রতিক্রিয়া নিয়ে ১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে একটি বিবরণ প্রস্তুত করো। বিবরণের শুরুতে একটি শিরোনাম দাও। নিজের কাজ শেষে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।
কোনো স্থান, বস্তু, প্রাণী, স্থাপনা, ঘটনা, ছবি, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি ইত্যাদি যে কোনো বিষয়ের বর্ণনা দেওয়া হয় যে ধরনের লেখায়, তাকে বিবরণমূলক রচনা বলে। সাধারণত বিবরণের শুরুতে বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরতে হয়। শেষে বিষয়টি সম্পর্কে বিশেষ কোনো মন্তব্য বা নিজস্ব পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে। বিষয় অনুযায়ী রচনাটির একটি শিরোনাম দিতে হয়।
কোনো স্থান, বস্তু, প্রাণী, স্থাপনা, ঘটনা, ছবি, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি ইত্যাদি যে কোনো বিষয়ের বর্ণনা দেওয়া হয় যে ধরনের লেখায়, তাকে বিবরণমূলক রচনা বলে। সাধারণত বিবরণের শুরুতে বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরতে হয়। শেষে বিষয়টি সম্পর্কে বিশেষ কোনো মন্তব্য বা নিজস্ব পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে। বিষয় অনুযায়ী রচনাটির একটি শিরোনাম দিতে হয়।
ছবির বিবরণ
ঘটনার বিবরণ
স্থানের বিবরণ
স্থাপনার বিবরণ
প্রাণীর বিবরণ
বস্তুর বিবরণ
নিচের বিষয়গুলো থেকে যে কোনো একটি বেছে নাও। বিষয়টির উপর ২০০-৩০০ শব্দের মধ্যে একটি বিবরণমূলক রচনা প্রস্তুত করো। লেখাটির একটি শিরোনাম দেবে। কাজ শেষে একে অন্যের লেখা পড়ে দেখো এবং বিবরণমূলক লেখার বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়ে অন্যের লেখার উপর মতামত দাও।
বিষয় ১: ব্যক্তিগত বা সামাজিক ঘটনা; যেমন-কোথাও ঘুরতে যাওয়া, কোনো অনুষ্ঠান বা উৎসবে অংশগ্রহণ করা, বিশেষ কিছু রান্না করা ইত্যাদি।
বিষয় ২: বিদ্যালয়ের কোনো ঘটনা; যেমন বিদ্যালয়ের প্রথম দিন, বিদ্যালয়ের কোনো বিশেষ ঘটনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
বিষয় ৩: বিশেষ কোনো স্থান বা স্থাপনা; যেমন- শহিদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ, পুরাকীর্তি বা পুরাতন স্থাপনা, নদীর তীর বা সমুদ্রসৈকত ইত্যাদি।
২০২২ সালে পাঁচটি দেশের মানুষ খাবার, পোশাক ও বিনোদন খাতে মোট আয়ের শতকরা কত ভাগ ব্যয় করেছে, তার কিছু কাল্পনিক উপাত্ত নিচের সারণিতে দেওয়া হলো। সারণির এসব উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বহু বাক্য রচনা করা যায়।
দেশ | খাদ্য | পোশাক | বিনোদন |
আয়ারল্যান্ড | ২৮.৯১% | ৬.৪৩% | ২.২১% |
ইতালি | ১৬.৩৬% | ৯.০০% | ৩.২০% |
স্পেন | ১৮.৮০% | ৬.৫১% | ১.৯৮% |
সুইডেন | ১৫.৭৭% | ৫.৪০% | ৩.২২% |
তুরস্ক | ৩২.১৪% | ৬.৬৩% | ৪.৩৫% |
উপরের সারণির উপাত্ত থেকে দুটি বাক্য রচনা করা যাক:
ক) পৃথিবীর সব দেশের তুলনায় তুরস্কের মানুষ খাবারের পিছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে।
খ) আয়ারল্যান্ডের মানুষ বিনোদনের পিছনে সবচেয়ে কম খরচ করে।
প্রথম বাক্যটি ঠিক নয়। এ বাক্যে পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে তুরস্কের ব্যয়ের তুলনা করা হয়েছে। অথচ ছকে সব দেশের উপাত্ত নেই। দ্বিতীয় বাক্যটিও ঠিক নয়। কারণ, ছকে কেবল তিনটি খাতের ব্যয়ের হিসাব দেওয়া আছে। এর বাইরে অন্য খাতগুলোর হিসাব দেওয়া নেই। বাক্য দুটি নিম্নরূপ হতে পারত:
ক) সারণির পাঁচটি দেশের মধ্যে তুরস্কের মানুষ খাবারের পেছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে।
খ) আয়ারল্যান্ডের মানুষ খাদ্য ও পোশাকের চেয়ে বিনোদন খাতে সবচেয়ে কম খরচ করে।
এবার তোমরা আগের পৃষ্ঠার সারণির উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পাঁচটি বাক্য তৈরি করো। বাক্যগুলো যৌক্তিক ও সঠিক হলো কি না, তা সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে দেখো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।
উপাত্তকে বিশ্লেষণ করার পরে যখন বাক্যে প্রকাশ করা হয়, তখন তা তথ্যে পরিণত হয়। আবার তথ্য বিশ্লেষণ করেও নতুন তথ্য পাওয়া যায়। তথ্য দু রকমের হতে পারে: সংখ্যামূলক ও বর্ণনামূলক। বই এবং সংবাদপত্রে নানা ধরনের সংখ্যামূলক ও বর্ণনামূলক তথ্য দেখা যায়।
সংখ্যামূলক তথ্যের নমুনা: ঢাকার গুলিস্তান থেকে সদরঘাটের দূরত্ব ২.৬ কিলোমিটার।
বর্ণনামূলক তথ্যের নমুনা: ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।
দৈনন্দিন জীবনে আমরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ঘটনা, সংবাদ, পরিস্থিতি, ছবি, সাহিত্যের বিভিন্ন উপাদান, অন্যের মতামত ইত্যাদি বিশ্লেষণ করি এবং এসব বিশ্লেষণ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যে কোনো ধরনের তথ্য- উপাত্ত কার্যকর উপায়ে বিশ্লেষণ করার জন্য নিজেকে কিছু প্রশ্ন করে কাজটি করা যেতে পারে:
মনে করি, একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কে কোন ধরনের সাহিত্য পছন্দ করে, তা নিয়ে একটি জরিপ চালানো হলো। ধরা যাক, সেই জরিপ থেকে পাওয়া উপাত্ত নিম্নরূপ:
তোমার একজন সহপাঠীর সাথে সারণির এসব উপাত্ত নিয়ে আলোচনা করো এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ১৫০-২০০ শব্দের মধ্যে একটি রচনা 'আমার বাংলা খাতা'য় তৈরি করো।
২য় অধ্যায়ের ২য় পরিচ্ছেদে শওকত আলীর 'যাত্রা' নামে একটি গল্প আছে। এই গল্পে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কিছু মানুষকে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ঐ পরিস্থিতিতে মানুষগুলো কী ধরনের অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং কেন যাচ্ছে, তা নিয়ে ১৫০-২০০ শব্দের মধ্যে একটি বিশ্লেষণমূলক রচনা 'আমার বাংলা খাতা'য় তৈরি করো। কাজ শেষে সহপাঠীদের বিশ্লেষণের সাথে নিজের বিশ্লেষণ মিলিয়ে দেখো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।